মিলান রাজপুত্রের কীর্তিগাঁথা।
ফুটবল অসাধারন সৌন্দর্যের একটি খেলা। অসাধারন সুন্দর এই কারনে, মানুষ ফুটবল খেলা শুধু মুগ্ধ হয়ে উপভোগ ঈ করেনা, বরং এই খেলা থেকে অনেক কিছুই শিখে। অনুপ্রেরিত হয়, অন্যকে সম্মান করতে শিখে। এই ফুটবল আমাদেরকে যুগে যুগে শতশত লেজেন্ডর জন্ম দিয়েছে, যারা নিজ দেশ বা ক্লাবের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপি মানুষের মন জয় করেছেন। তেমন ই একজন লিজেন্ডের কথা বলবো আজ।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় অধিকাংশ ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী ফুটবলাদের পারিবারিক অবস্থা সচ্চল ছিলোনা। ফুটবল সম্রাট কালো মানিক পেলেও উঠে এসেছিলেন বস্তি থেকে। সেইসব ফুটবলারদের কিছু থাকুক না থাকুক, হৃদয়ে ছিলো ফুটবল প্রীতি আর ফুটবলীয় শক্তি। সহস্র বাধা বিপত্তি পেরিয়া তারা ঠিকই পৌঁছেছিলেন কাঙ্খিত লক্ষ্যে। ব্যতিক্রম ছিলো সে। কারন সে বস্তিতে জন্মায়নি। আর সেইসব ফুটবলারদের মতো দরিদ্র কি জিনিস তা জন্মের পর বুঝতে পারেনি।
সময়টা তখন ১৯৮২ সালের ২২ এপ্রিল। ইঞ্জিনিয়ার বাবা ও শিক্ষিকা মায়ের ঘর আলো করে জন্ম নিয়েছিলো সে। তার বেড়ে ওঠা ছিলো বাকি আট-দশটা ধনশালী বাবার পুত্র হিসেবে। তখন কে জানতো এই শিশু পুত্রটি বিশ্বজয় করবে।
ইঞ্জিনিয়ার বাবা স্বভাবতই চেয়েছিলেন তার পুত্র ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুক, তার মতো বড় ইঞ্জিনিয়ার হোক। ব্যাকগ্রাউন্ডে গেলে দেখা যায় ছাত্র হিসেবে সে সত্যিই অসাধারন মেধাবী ছিলো। তার মেধা বর্ননা করতে সামান্য একটা উদাহরণ ই যথেস্ট। একবার ১০ নাম্বারের ১০ বিষয়ের উপর পরিক্ষায় সে ৯৯ পেয়েছিলো। শিক্ষক ইচ্চেকরেই তাকে ১ মার্ক কম দিয়েছিলেন। কিন্তু ছেলেটা কেঁদেকেটে অস্থির! কেনো সে ১ নাম্বার কম পাবে?
বলছিলাম সেই মেধাবী ছেলেটির কথা। ব্রাজিলের শহর ব্রাসিলিয়াতে তার জন্ম হয়েছিলো। বাবা মায়ের দেয়া নাম "রিকার্ডো আইজেক্সন ডস সান্তোস লেইতে আর ডাকনাম ছিলো "কাকা "। কাকা নামটি তার ছোটভাই ডিয়াগো দিয়েছিলো, কারন সে বড়ভাইয়ের এত্ত বড় নামে ডাকতে পারেনা। মাত্র ৮ বছর বয়সে সে স্থানিয় একটি ফুটবল ক্লাবে খেলা শুরু করে। ফুটবলের সাথে সাথে খুব ভালো টেনিসও খেলতে পারতো। ক্যারিয়ার গড়ার প্রশ্নে এবার কাকা'কে থমকে দাঁড়াতে হলো। হয় ফুটবল অথবা টেনিস- যেকোনো একটি সে খেলতে পারবে। এই ভয়ানক ডিশিশন কাকা নিয়ে নিলো। ভাগ্যিস! সেদিন কাকা ফুটবল খেলাকেই ক্যারিয়ার গড়ার জন্য বেছে নিয়েছিলো।
টেনিস খেলার সমাপ্তি ঘটে সেখান থেকেই। অতপর সাও পাওলো ক্লাব কাকার সাথে চুক্তি করে। কাকার বয়স তখন মাত্র ১৫ বছর! নিয়মিত খেলতে থাকেন সাও পাওলো ক্লাবের সেই বয়সভিত্তিক দলের হয়ে। কিন্তু ১৮ বছর বয়সে একবার একটা দুর্ঘটনা ঘটলো তার জীবনে, যা কাল হয়ে দাড়ালো তার ক্যারিয়ারের জন্য। সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে তিনি মেরুদন্ডে সেসময় আঘাত পান৷ এই আঘাত এমনই ছিল যে, অনেকে ভেবেছিলেন তিনি পঙ্গ হয়ে যাবেন৷ তবে সে অবস্থা থেকে তিনি ফিরে আসেন৷ কাকা মনে করেন, বিধাতার কৃপাতেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন৷ তাই তখন থেকে তিনি তাঁর আয়ের একটা অংশ নিয়মিত চার্চে দান করে থাকেন৷
★ ব্রাজিলের জার্সিতে এবার রিকার্ডো কাকাঃ
ব্রাজিলের জার্সিতে কাকার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০০২ বিশ্বকাপের একটি ম্যাচে। ম্যাচটি ছিলো ক্রোয়েশিয়ার সাথে। তারকায় ঠাসা ব্রাজিল দলে তখন ফর্মের তুঙ্গে রোনাল্ড লিমা, কার্লোস, রোনালদিনহো, রিভালদো রা...! সেই দলে সাবস্টিটিউট হয়ে মাঠে নামলেন কাকা। সেবার বিশ্বকাপ জয় করেছিলো ব্রাজিল।
৫ম বিশ্বকাপজয়ী দলের প্লেয়ার হিসেবে বিশ্ব ফুটবলে কাকার প্রবেশ হলো। এরপর অসাধারন পার্ফমেন্স করে নিয়মিত জাতীয় দলে জায়গা করে নেন কাকা। ২০০৩ কনফেডারেশন কাপে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হয়, সেই ধারা বজায় রেখে একের পর এক দুর্দান্ত পার্ফম করে কাকার ব্রাজিল।
৫ম বিশ্বকাপজয়ী দলের প্লেয়ার হিসেবে বিশ্ব ফুটবলে কাকার প্রবেশ হলো। এরপর অসাধারন পার্ফমেন্স করে নিয়মিত জাতীয় দলে জায়গা করে নেন কাকা। ২০০৩ কনফেডারেশন কাপে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হয়, সেই ধারা বজায় রেখে একের পর এক দুর্দান্ত পার্ফম করে কাকার ব্রাজিল।
কিন্তু ২০০৬ বিশ্বকাপে এসে হোচট খায় তারা। সেবার ইতালির ঘরে উঠেছিলো বিশ্বকাপ। কোয়ার্টার ফাইনালে থিয়েরি হেনরির জয় সুচক গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। খালি হাতে ফিরে ব্রাজিল। কিন্তু সেখানে রিকার্ডো কাকা ছিলেন ব্যতিক্রম, দলের প্রয়োজনে মিডফিল্ডের তুরুপের তাসে পরিনত হন তিনি।
২০০৩ সালে ৮ মিলিয়ন ট্রান্সফার ফি'র বিনিময়ে এসি মিলানে যোগ দিয়েছিলেন কাকা। সেখানে ক্রমেই তিনি উজ্জল থেকে উজ্জলতর হয়ে উঠেন। ২০০৭ সালে রিকার্ডো কাকার আসল রুপ দেখা যায়। ক্লাব পর্যায়ে আর জাতীয় দলের অসাধারন পার্ফমেন্সের জন্যে তাকে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের খেতাবে ভুষিত করা হয়। তিনি যাদের হারিয়ে এই পুরষ্কার নিজের করে নিয়েছিলেন তাদের নাম বলার লোভ সামলাতে পারছিনা, তারা ছিলেন বর্তমান সময়ের দুই ফুটবল শ্রেষ্ঠ ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ড ও লিওনেল মেসি।
২০০৭ কনফেডারেশন কাপের ফাইনালে দলের অন্যতম সেরা প্লেয়ার রিকার্ডো কাকা ও ডিফেন্ডার লুসিওকে ছাড়াই আর্জেন্টিনার মোকাবেলা করে ব্রাজিল। ব্রাজিলের ডাগ আউটে সেদিন কোচের ভুমিকায় ছিলেন বিশ্বকাপজয়ী প্লেয়ার কার্লোস দুঙ্গা। তার সুবিচক্ষন নেতৃত্ কাকা বিহীন আর্জন্টিনাকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেয় ব্রাজিল।
২০১০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সেরা প্লেয়ার ছিলেন রিকার্ডো কাকা।
ভাঙ্গা পা নিয়েও সেবার সর্বোচ্চ সংখ্যাক এসিস্ট করেছিলেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে সেবার তাকে থামতে হয়। নেদ্যারল্যান্ডস এর সাথে জিতে যাওয়া ম্যাচটাই সেদিন হেরেছিলো ব্রাজিল। ম্যাচ শেষে রিকার্ডো কাকার বিমর্ষ মুখ দেখে মনে হচ্ছিল তার জন্যেই যেন বিশ্বকাপ হাতছাড়া হয়ে গেলো!
২০১৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলে কাকা জায়গা পান নি। তাকে ছাড়াই দল ঘোষনা করেন লুই ফেলিপে স্কোলারি। নিজ দেশে আয়োজিত বিশ্বকাপে অংশ নিতে না পেরে কাকা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলেন। এরপর থেকেই তিনি জাতীয় দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। সর্বশেষ ২০১৫ কোপা আমেরিকায় বদলি প্লেয়ার হিসেবে খেলেন তিনি। তারপর আরোও কয়েকটি প্রীতি ম্যাচে তাকে দেখা যায় জাতীয় দলে। ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে ৯৪ ম্যাচে কাকার গোলসংখ্যা ২৯টি। মজার ব্যাপার হচ্চে এই ২৯ টি গোল দেয়া ম্যাচে কখনোও হারেনি ব্রাজিল।
★ এসি মিলানের নায়ক রিকার্ডো কাকাঃ
এসি মিলান আর রিকার্ডো কাকা একই সুত্রে গাথা দুইটি ফুল বলা চলে। মিলানের হয়ে গোলের সেঞ্চরিও করেছেন কাকা। দীর্ঘসময় এখানে খেলে যে সম্মান পেয়েছেন তা কখনোও ভুলার নয়।
ইতালি সরকার তাকে ইতালির নাগরিকত্ব দান করে মিলানে থাকাকালে। মিলানের ফ্যানদের কাছে রিকার্ডো কাকা এখনো একজন নায়ক। খুশি হয়েই তারা তাকে " প্রিন্স অব সানসিরো " খেতাব দিয়েছিলো। এসি মিলানকেও তিনি দিয়েছিলেন দু'হাত ভরে।
ইতালি সরকার তাকে ইতালির নাগরিকত্ব দান করে মিলানে থাকাকালে। মিলানের ফ্যানদের কাছে রিকার্ডো কাকা এখনো একজন নায়ক। খুশি হয়েই তারা তাকে " প্রিন্স অব সানসিরো " খেতাব দিয়েছিলো। এসি মিলানকেও তিনি দিয়েছিলেন দু'হাত ভরে।
★ রিয়াল মাদ্রিদের অবহেলিত কাকাঃ
২০০৯ সালের ৮ই জুন পৃথিবীর ২য় সর্বোচ্চ রেকর্ড ট্রান্সফার ফি ( ওই সময়ের ) ৬৮.৫ মিলিয়ন এর বিনিময়ে রিয়াল মাদ্রিদে জয়েন করেন ৷
মাদ্রিদে আসার পরই যেন হারিয়ে যান এসি
মিলানের সেই বিধ্বংসী কাকা ৷তখন থেকে ইনজুরিই যেন তার নিত্যদিনের সঙ্গী আর তার সঙ্গে যুক্ত হলো কোচের অবহেলা। ইনজুরি বাধা আর কোচের অবহেলার কবল থেকে কিছুতেই রক্ষা পাচ্ছিলেন না তিনি ৷ বেশির ভাগ সময়ই কাটাতে হতো বেঞ্চে বসে, সতীর্থদের খেলা দেখে ৷ তবুও জানালেন তিনি সুখেই আছেন মাদ্রিদে ৷
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে কাকার পারফর্মেন্সকে অনেকেই খাটো করে দেখেন৷ কিন্তু কাকা যে মাদ্রিদের হয়ে ৪ বছরে ১২০ ম্যাচে ৩২টি গোল এবং ৩২টি অ্যাসিস্ট করেছেন এবং যার বেশির ভাগ ম্যাচই খেলেছেন সাব হিসেবে!
কোচের অবহেলায় আস্তে আস্তে ফর্মহীনতায় ভুগতে লাগলেন কাকা। রিয়ালের হয়ে খেলার মতো মন মানষিকতা তখনো তার ছিলো।কিন্তু মাদ্রিদে কাকা মাদ্রিদ লিজেন্ড হতে পারলেন না।
কোচের অবহেলায় আস্তে আস্তে ফর্মহীনতায় ভুগতে লাগলেন কাকা। রিয়ালের হয়ে খেলার মতো মন মানষিকতা তখনো তার ছিলো।কিন্তু মাদ্রিদে কাকা মাদ্রিদ লিজেন্ড হতে পারলেন না।
★ ব্যক্তিজীবনে আমাদের রিকার্ডো কাকাঃ
বিয়েটা একটু আগে-ভাগেই সেরে নিলেন প্রিন্স অব সানসিরো। এ ব্যাপারে কাকা বলেন- "সারাক্ষণ মেয়েদের যা উৎপাত! কার্ডে, মুঠোফোনে কেবলই বিয়ের প্রস্তাব কিংবা প্রেমের বায়না।কেউ কেউ তো এককাঠি বেশি সরেস,
'আমাকে বিয়ে করবে' প্লাকার্ডে এমন লেখা নিয়ে মাঠেও হাজির'
অবশেষে লক্ষ- কোটি তরুনীর হৃদয় ভেঙ্গে ২০০৫ সালে সংসার ভুবনে প্রবেশ করলেন ক্যারোলিনা সেলিকোর সঙ্গে, রিকার্ডো কাকার বয়স তখন মাত্র ২৩ বছর!
ক্যারোলিনাকে বিয়ে করার পিছনেও কাহিনি আছে। পারিবারিক একটা অনুস্যানে তিনি ক্যারোলিনাকে প্রপোজ করেছিলেন বিয়ের জন্য। ফুটবলার কাকা সেদিন হাতে তুলে নিয়েছিলেন গিটার। রোমান্টিক এ মানুষটির প্রস্তাব তাই ফিরিয়ে দিতে পারেন নি ক্যারোলিনা।
অবসর সময়ে কাকা কি করেন? এমন প্রশ্ন তো উঠতেই পারে। 'প্রিটিওম্যান' খ্যাত হলিউড তারকা জুলিয়া রবার্টস তাঁর ভীষণ প্রিয়। প্রিয় নায়ক টম হ্যাংকস। প্রার্থনা তিনি নিত্যই করেন। এক দুর্ঘটনায় মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছিলেন। ফুটবল খেলা আর হবে না, এমনটাও ধরে নিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু আলৌকিকভাবে কাকা দ্রুত সেরে উঠলেন। এরপর থেকেই তিনি ধর্মভীরু।
এ বিষয়ে একটা উদাহর দেয়া যেতে পারে। একবার কাকা পরিবারের সাথে কোথাও বেড়াতে গিয়েছেন। সেখানে দেখতে পেলেন মানুষজন ভক্তি সহকারে একজন ধর্ম বিষেশজ্ঞের কথা শুনছেন। ব্যাস, তিনিও বসে পড়লেন সে আসরে। মন দিয়ে শুনলেন ধর্ম বিষেশজ্ঞের কথা। উল্লেখ্য, ধর্ম নিয়ে সে আসর টি ছিলো মুসলামদের! এ থেকেই বুঝা যায় কাকা কতটা ধর্মপ্রাণ।
★ রিকার্ডো কাকার যত অর্জনঃ
-মিলানের হয়ে জিতেন সিরি-আ ফরেইন ফুটবলার অফ দ্যা ইয়ার: ২০০৪, ২০০৬, ২০০৭।
-সিরি-আ ফুটবলার অফ দ্যা ইয়ার: ২০০৪, ২০০৭
-উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ব্রোঞ্জ টপ স্কোরার:২০০৫–০৬ -উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বেস্ট মিডফিল্ডার:২০০৫
-উয়েফা টিম অফ দ্যা ইয়ার: ২০০৬, ২০০৭, ২০০৯
রিকার্ডো কাকা ও ক্যারলিনা। |
ক্যারোলিনাকে বিয়ে করার পিছনেও কাহিনি আছে। পারিবারিক একটা অনুস্যানে তিনি ক্যারোলিনাকে প্রপোজ করেছিলেন বিয়ের জন্য। ফুটবলার কাকা সেদিন হাতে তুলে নিয়েছিলেন গিটার। রোমান্টিক এ মানুষটির প্রস্তাব তাই ফিরিয়ে দিতে পারেন নি ক্যারোলিনা।
অবসর সময়ে কাকা কি করেন? এমন প্রশ্ন তো উঠতেই পারে। 'প্রিটিওম্যান' খ্যাত হলিউড তারকা জুলিয়া রবার্টস তাঁর ভীষণ প্রিয়। প্রিয় নায়ক টম হ্যাংকস। প্রার্থনা তিনি নিত্যই করেন। এক দুর্ঘটনায় মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছিলেন। ফুটবল খেলা আর হবে না, এমনটাও ধরে নিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু আলৌকিকভাবে কাকা দ্রুত সেরে উঠলেন। এরপর থেকেই তিনি ধর্মভীরু।
এ বিষয়ে একটা উদাহর দেয়া যেতে পারে। একবার কাকা পরিবারের সাথে কোথাও বেড়াতে গিয়েছেন। সেখানে দেখতে পেলেন মানুষজন ভক্তি সহকারে একজন ধর্ম বিষেশজ্ঞের কথা শুনছেন। ব্যাস, তিনিও বসে পড়লেন সে আসরে। মন দিয়ে শুনলেন ধর্ম বিষেশজ্ঞের কথা। উল্লেখ্য, ধর্ম নিয়ে সে আসর টি ছিলো মুসলামদের! এ থেকেই বুঝা যায় কাকা কতটা ধর্মপ্রাণ।
★ রিকার্ডো কাকার যত অর্জনঃ
-মিলানের হয়ে জিতেন সিরি-আ ফরেইন ফুটবলার অফ দ্যা ইয়ার: ২০০৪, ২০০৬, ২০০৭।
-সিরি-আ ফুটবলার অফ দ্যা ইয়ার: ২০০৪, ২০০৭
-উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ব্রোঞ্জ টপ স্কোরার:২০০৫–০৬ -উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বেস্ট মিডফিল্ডার:২০০৫
-উয়েফা টিম অফ দ্যা ইয়ার: ২০০৬, ২০০৭, ২০০৯
-ফিফপ্রো ওয়ার্ল্ড ইলিভেন: ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮
-উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টপ স্কোরার: ২০০৬–০৭
-উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বেস্ট ফরওয়ার্ড: ২০০৬–০৭
-উয়েফা ক্লাব ফুটবলার অফ দ্যা ইয়ার: ২০০৬–০৭
-ফিফপ্রো ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার: ২০০৭..
-ফিফা ব্যালন ডি ওর: ২০০৭..
-ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ গোল্ডেন বল: ২০০৭..
-ফিফা ওয়ার্লড প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার: ২০০৭..
-ওয়ার্লড সকার প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার: ২০০৭..
-IFFHS ওয়ার্ল্ডস বেস্ট প্লেমেকার: ২০০৭..
-ফিফা টিম অফ দা ইয়ার: ২০০৮..
-ফিফা কনফেডারেশন কাপ গোল্ডেন বল:২০০৯
-ফিফা কনফেডারেশন কাপ বেস্ট ইলিভেন ২০০৯
-বর্ষসেরা ফুটবলার (২০০৪, ২০০৭)
-সাম্বা ডি'অর (২০০৮),
-ফিফা বিশ্বকাপ টপ অ্যাসিস্টার (২০১০),
-উয়েফা ক্লাব বর্ষসেরা ফুটবলার (২০০৬–০৭),
-লাতিন বর্ষসেরা খেলোয়াড় (২০০৭)।
-সিরি এ (২০০৩–০৪),
-উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগ (২০০৬–০৭),
-ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ (২০০৭),
-লা লিগা (২০১১–১২),
-কোপা ডে রে (২০১০–১১),
-ফিফা বিশ্বকাপ (২০০২),
-ফিফা কনফেডারেশনস কাপ (২০০৫,২০০৯)।
রিকার্ডো কাকা একজন ফুটবলারের নাম নয়, একটা আবেগের নাম। বাংলাদেশে লাখো-কোটি মাদ্রিদ ফ্যান, মিলান ফ্যানের জন্ম হয়ে শুধুমাত্র এই কাকার জন্য। শুধুমাত্র একটিবার কাকা'কে দেখার জন্যে অনেক তরুন-তরুনী জেগে থাকতো। কাকা'র ম্যাচ দেখার জন্যে সবকিছু বিসর্জন! কাকা শুধু একটা নাম নয়, একটা ব্রান্ড। কাকা ফ্যানরা কাকা নামের মধ্যেই খুজে পায় ফুটবলের সৌন্দর্য। রিকার্ডো কাকার একজন ছোট্ট ফ্যান হিসেবে অনেক কিছুই লেখার ইচ্চা ছিলো, ২ ঘন্টায় লেখা এক পোস্টে তো আর বায়োগ্রাফি লেখা যায় না। কি আর করা। শুধু এটুকুই বলবো- রিকার্ডো কাকা তুমাকে ভালোবেসেছিলাম, ভালোবাসি এবং ভালোবেসে যাবো।
© আহমদ আতিকুজ্জামান।
No comments